চীনের গুয়াংজু শহরে চলছে বিশ্বের বৃহত্তম ট্রেড শো ‘চায়না আমদানি ও রপ্তানি মেলা’; ক্যান্টন ফেয়ার। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য আমদানিকারক ও ক্রেতা সাধারণ জড়ো হয়েছেন চীনের ঐতিহ্যবাহী ও মর্যাদাপূর্ণ এই মেলায়। এতে আমদানিকারক থেকে শুরু করে সাধারণ ক্রেতা—দর্শনার্থী সকলের নজর কাড়ছে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ইউরোপিয়ান এসিসি ব্র্যান্ড ও বাংলাদেশী ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এআইওটি বেজড স্মার্ট ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার। ক্যান্টন ফেয়ারের মাধ্যমে বিশ্বের নতুন নতুন দেশে ওয়ালটন পণ্যের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ওয়ালটন গ্লোবাল বিজনেস শাখার সূত্রমতে, ক্যান্টন ফেয়ারে আসা আন্তর্জাতিক ক্রেতারা প্রধানত দেখছেন কার পণ্যের মান কত ভালো, সেটা কত কম দামে কেনা যাচ্ছে। এই বিষয়টিই আশা জাগাচ্ছে ওয়ালটনকে। কারণ পণ্যের মাথাপিছু উৎপাদন মূল্যের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছে ওয়ালটন। মান নিয়েও ক্রেতারা সন্তুষ্ট। আর তাই ওয়ালটন ও এসিসি ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফ্রিজ, এসি, সোলার ফ্যান, রিচার্জেবল ফ্যান ইত্যাদি প্রযুক্তিপণ্যের প্রতি বৈশ্বিক ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ওয়ালটন গ্লোবাল বিজনেস শাখার ভাইস—প্রেসিডেন্ট ও ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুর রউফ জানান, মেলায় বিদেশি ক্রেতা, ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের সামনে এসে বিশ্বের প্রথম এআইওটি বেজড ৯রহ১ কনভার্টিবল মোডের ফ্রে ডোর ও ৮রহ১ কনভার্টিবল মোডের সাইড বাই সাইড ডোরের স্মার্ট রেফ্রিজারেটর দেখে থমকে দাঁড়াচ্ছেন। এরপর তারা ব্যাপক কৌতূহল নিয়ে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের ভেতরে এসে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত আইওটি বেজড ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব স্মার্ট ফ্রিজ, এসি, ভিআরএফ এসি, ফ্যান ইত্যাদি প্রযুক্তিপণ্য দেখে অভিভূত হচ্ছেন। উপস্থিত প্রতিনিধিদের কাছ থেকে ওয়ালটনের প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া, গুণগতমান ইত্যাদি সম্পর্কে খঁুটিনাটি ধারণা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ক্যান্টন ফেয়ারে বৈশ্বিক ক্রেতাদের থেকে আশাতীত সাড়া পাচ্ছি। এই মেগা ট্রেড শোর মাধ্যমে বৈশ্বিক ক্রেতাদের সঙ্গে ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক সেতুবন্ধন তৈরি হচ্ছে। ওয়ালটনের তৈরি পণ্যসামগ্রী ইতোমধ্যে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ক্যান্টন ফেয়ারের মাধ্যমে নতুন নতুন দেশে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সেইসঙ্গে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্লোবাল ব্র্যান্ড হওয়ার ভিশন বাস্তবায়ন আরো গতিশীল হবে বলে আশা করছি।
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের ব্র্যান্ড ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ক্যান্টন ফেয়ারের শুরু থেকে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে ক্রেতা সমাগম হচ্ছে প্রচুর। ইতোমধ্যে আমেরিকা, জর্ডান, সৌদি আরব, উরুগুয়ে, আলজেরিয়া, গ্রিস, মধ্য প্রাচ্য, পোল্যান্ড, প্যালেস্টাইন, ইরাক, মেক্সিকো, জামার্নি, গ্যাবন, পানামা, ডমিনিকান রিপাবলিক, পেরু, ইয়েমেন, লেবানন, ওমান, মায়ানমার, ভারত ইত্যাদি দেশ থেকে ক্যান্টন ফেয়ারে আগত প্রচুর সংখ্যক ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসায়ী ও ক্রেতা ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেছেন। এসব দেশের ক্রেতারা ইউরোপিয়ান খ্যাতনামা এসিসি ব্র্যান্ডের আন্তর্জাতিকমানের পণ্য বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনে তৈরি হচ্ছে জেনে অভিভূত হচ্ছেন। পাশাপাশি ওয়ালটন ও এসিসি ব্র্যান্ডের স্মার্ট রেফ্রিজারেটর ও এসিতে আইওটি বেজড সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, আকর্ষণীয় ডিজাইন, নিখঁুত ফিনিশিং, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও সাশ্রয়ী মূল্য দেখে সকলেই প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেছেন।
ওয়ালটন গ্লোবাল বিজনেস শাখার কর্মকর্তা শাহরিয়ার জানান, ক্যান্টন ফেয়ারে আগত বৈশ্বিক ক্রেতা—দর্শণার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন। এখানে ক্রেতা—দর্শণার্থীদের নজর কাড়ছে ওয়ালটনের আইওটি বেজড ইনভার্টার প্রযুক্তির বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী অফলাইন ভয়েস কন্ট্রোল স্মার্ট এসি, ভিআরএফ এসিসহ বেশ কয়েকটি মডেলের রেফ্রিজারেটর। বিশেষ করে অফলাইন ভয়েস কন্ট্রোল এসি’র বিশ্বের যেকোনো দেশের ভাষায় পরিচালন ফিচারটি ক্রেতাদের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।
এছাড়া ৬৬০ লিটার ধারণক্ষমতার কনর্ভাটিবল মোডের সর্বাধুনিক ফিচারের ফ্রে ডোর মডেল, ৬১৯ লিটারের মাল্টিকালার সাইড বাই সাইড ডোর, ওয়াটার ডিসপেন্সার ফিচারের ৬৪৬ লিটার মডেল, ৩৪৩ লিটারের কম্বি মডেল, ১৯৩ ও ৯৩ লিটারের সিঙ্গেল ডোর মডেলের রেফ্রিজারেটরসহ আইসক্রিম কুলার, বেভারেজ কুলারও ক্রেতাদের নজর কেড়েছে। পাশাপাশি সোলার এবং রিচার্জেবল ফ্যানও ভালো সাড়া ফেলেছে।
উল্লেখ্য, ১৫ অক্টোবর থেকে চীনের গুয়াংজু শহরে চায়না ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট ফেয়ার কমপ্লেক্সে শুরু হয়েছে ১৩৪তম শরৎকালীন ক্যান্টন ফেয়ারের প্রথম ধাপ। চলবে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। এতে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড হাউজহোল্ড ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস ক্যাটাগরিতে তৃতীয় বারের মতো অংশ নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের একমাত্র সর্ববৃহৎ ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। ক্যান্টন ফেয়ারের আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের মেগা প্যাভিলিয়ন।